আজ মঙ্গলবার, ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শহরে মাদক ব্যবসা থেমে নেই

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
কমছে না মাদক ব্যবসা। শহরের বিভিন্ন স্পটে নানা কৌশলে চলছে এই মরণ নেশার বাণিজ্য। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা বিক্রি হচ্ছে পাড়া মহল্লার অলি-গলিতে। পুলিশ ধরলেও পরে জামিনে মুক্ত হয়ে ফের মাদক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কতিপয় পুলিশ সদস্য ধরে ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র মতে, শহরের ২ নং রেল গেটে অনেক দিন ধরে গাঁজা বিক্রি গাঁজা বিউটি। রেললাইন ধরে যে থান কাপড়ের মার্কেট গড়ে উঠেছে সেখানেই বাস করে এই বিউটি। গাঁজা বিক্রি করতে করতেই তার নামের সাথে গাঁজা জড়িয়ে গেছে। গলাচীপায় ঘোড়া পাড়ায় মাদক বিক্রি করছে আরেক মাদক বিক্রেতা মোবাইল পারভীনের মা ও ভাই তারা মিয়া। তোলারাম কলেজ রোড, গলাচীপা রূপার বাড়ি এলাকায় মাদকের ডিলার আলম মাদক ব্যবসা চালাতে নতুন নতুন সেলসম্যান তৈরী করে। কেউ তার কথা না শুনলে মারধর করে। কিছু দিন আগে এক চটপটি বিক্রেতা মাদক বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় আলম ছুরিকাঘাত করেছে।
বাবুরাইলের লেংড়া আক্তারের সুনাম রয়েছে মাদক বিক্রেতাদের কাছে। তার কাছে গেলে সব ধরনের মাদক পাওয়া যায় বলে তার কাস্টমারের সংখ্যা বরাবরই বেশী। সে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন থেকে শুরু করে গাঁজাও বিক্রি করে। নয়াপাড়ার মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে রাকিব, জেনায়েদ, সুমন ।

জামতলায় হাজী রিপনের বাড়িতে নিয়মিত মাদকের আসর বসে বলে জানা গেছে। জামতলা এলাকার আরেক সন্ত্রাসী অলির ছেলে রিফাত মাদকের সাথে জড়িত। সে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করে। অলি নিজেও মাদকসেবী। এ এলাকায় কয়েকটি মাদক সিন্ডিকেট রয়েছে। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় জামতলায় মাদক বিক্রি হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

চাষাড়া স্টেশনের পশ্চিম পাশে একটি বড় সিন্ডিকেট দিন-রাত মাদক ব্যবসা করলেও তারা ভ্রাম্যমান বলে জানা গেছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরা দ্রুত মাদক বিক্রি করে সটকে পড়ে। চাঁনমারির মাউরাপট্টি ও বস্তিতে প্রতিদিন দিনের বেলায়ই মাদক বিক্রি হয়। এখানে থেকে বিভিন্ন সময়ে মাদক বিক্রেতা ধরলেও থেমে নেই ওরা। এখানে মাদকের অন্যতম ডিলার বোবা। মাদক বিক্রেতা রয়েছে রিক্্রা তারেক, আল আমীন, আরমান, পল্টি শামীম, ডাউব্বা সেলিম, মগা সোহেল, বাবু, শান্ত, কোরবান, রুবেল, হাবিব, সালাউদ্দিন, সোহেল, কোমরভাঙ্গা রিয়াজ, সোলেমান, রবি, সোহান, বিজয়, সাজু, কাশেম, জয়, সালাম, জহির, চোরা সুমন। খানপুর-রেল লাইনের দুই পাড়ে একাধিক মাদক সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা মিলে মিশেই বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করে। এরমধ্যে আলম, ফারুক, সোহেল, শাহ আলম, জীবন, ফালান , জিকু, পান্না অন্যতম।

এছাড়া শহরের নতুন জিমখানায় মাদকের ৫ টা সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেটগুলো নারী ও শিশুদের ব্যবহার করে মাদক বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে কৌশলে মাদক ব্যবসা ও সেবন চলে। নিরাপদ জোন ভেবে আবাসিক হোটেলের রুম ভাড়া নেয় মাদক বিক্রেতা ও সেবী।
সচেতন মহলের মতে, মাদকের বিরুদ্ধে যতটা বলা হয় তত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মাদক বিক্রেতাদের কৌশলের কাছে পেরে উঠেনা পুলিশ। কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশের কতিপয় সদস্য ও তাদের সোর্স মাদক বিক্রেতাদের সাথে সখ্য রাখে।

শহরে টহল দেয়া পুলিশ লাইন্সের পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মিনি পিকআপ, সিএনজি, অটো রিকশা নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। এরপর দেখে দেখে ধরে মাদক পেলেও ছেড়ে দেয়। গতকাল ভোর সাড়ে ৬টায় এমন চিত্র দেখা গেছে চাষাঢ়া বন্ধন বাস কাউন্টারের অদূরে। একটা মিনি পিকআপে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য এক বৃদ্ধকে ধরে। এসময় তাদের সোর্স ওই ব্যক্তির ব্যাগ তল্লাশি করে একটি গাঁজার পোটলা পাওয়া যায়। লোকটি স্বীকার করে সে গাঁজা খায়।

পরে লোকটিকে আর্মী মার্কেটের পেছনে নিয়ে যায় পুলিশ ও সোর্স। কিছুক্ষন পর লোকটিকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময়ে ওই পুলিশ সদস্যদের গায়ে ড্রেস পরা থাকে কোন নাম লেখা ছিলোনা।